হজরত মাওলানা আশ্রাফ আলী থানবী (র ) ফরমাইয়াছেন, আমার কাছে এক মাওলানা সাহেব মুরিদ হন, তিনি বলেন যে, আমার বাবা একজন পীর ছিলেন এবং তাহার জীবিতকালে নানা প্রকার হাদিয়া, ফল-মূল, বকরী ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে আসিত ।
তাহার ইনতেকালের পর আমার কাছেও তদ্রুপ টাকা-পয়সা ইত্যাদি আসিতে আরম্ব করে, অতচ লোকদিগকে কোন ছবকও দেই না ।
হজরত ফরমান, তোমার বাবা তোমাকে কি বাতাইয়াছেন? তিনি উত্তর করিলেন, বাবা কোন কালাম বা অজিফা বাতান নাই, বলিয়াছেন, আমার পায়খানায় তুমি সর্বদা পায়খানা করিবে এবং তালা বন্ধ করিয়া রাখিবে, যাহাতে অন্য কেহ ঐ পায়খানায় যাইতে না পারে ।
হুজুর বলিলেন, ঐ পায়খানায় যাওয়া বন্ধ কর । তখন থেকে তিনি ঐ পায়খানায় যাওয়া বন্ধ করিলেন । সেই হইতে তাহার কাছে হাদিয়া, তোহফাও কম আসিতে আরম্ভ করিল ।
হুজুরকে ইহা জানান হইল, তিনি পায়খানার মাটি খুঁড়িতে আদেশ দিলেন । মাটি খোঁড়ার পরে একটি পাকা গম্বুজ দেখা গেল । গম্বুজ ভাঙ্গিলে পর দেখা গেল, এক জেলদ খোলা কোরানে পাকের উপর বিভিন্ন নক্সা অংকিত তাবিজ । নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক । আখেরাত বিসর্জন দিয়া দুনিয়া অর্জনের জন্য এহোন কাজ করতে পারে? ভেদে মারিফাত বা ইয়াদে খোদা কিতাব থেকে নেওয়া ।
হ্যা, করতে পারে, আর ওই লোক জন জানত না, যারা ছেরা কাগজের মধ্যে আরবিতে লেখা দেখলে তা রাস্তা থেকে তুলে পানিতে পেলে দিতো, যদিও ছেরা কাগজের টুকরায় আরবিতে লেখা সাবানের বিজ্ঞাপন ছিল ।
তাহারাতো, গরু-বকরী, নগদ টাকা হাদিয়া দেন পীরকে, কখনও মেনের আশা পূর্ণ করতে বা তরীকার ছবক নিতে ।
ওই পীর তরীকা জানতেন কি করলে কি হয় ।
তরীকা হচ্ছে পথ, পন্থা বা পদ্ধতি ।
পীর তরীকার ছবক দেন আর মুরিদ ছবক নেন।
একেক পীরের একেক তরীকা, আবার এক পীর একের অধিক তরীকারও ছবক দিতে পারেন ।
পীর মুরিদকে বিশেষ এক পদ্ধতিতে, এমন এক শিক্ষা দিবেন যার ফলে মুরিদ ফানাফিল্লায় উত্তীর্ণ হয়ে যাবে ।
ফানাফিল্লা হচ্ছে আল্লাহ সাথে মিশে যাওয়া । ফানা + ফি +আল্লাহ, ফানা অর্থ ধ্বংস বা মিশে যাওয়া ।
আর আল্লাহ সাথে মিশে যেতে পারলে, তুমি আর তুমি থাকবে না, তখন তুমি কে আর আল্লাহ কে, আল্লাহ মাঝে তুমি, তুমার মাঝে আল্লাহ । তখন ইচ্ছা করলে মৃতকেও জীবিত করা সম্ভব, এর উদাহরন পীরের কিতাবে আছে ।
এই গোপন শিক্ষা শিখার জন্য বিভিন্ন তরিকা আছে যেমন: মাইজভাণ্ডারী, চিশতীয়া, কাদেরীয়া, নাকশবন্দীয়া, তিজানিয়া, সুহ্রাওয়ার্দিয়া, মাদারীয়া, আহমদিয়া, কলন্দরিয়া ও মুজাদ্দিদিয়া তরিকা।
ওই মাওলানা সাহেবের পীর বাবা, শয়তান পীর বা ভন্ড ছিলেন বলে, দেওয়ান বাগী, রাজার বাগী, চরমোনাই বা আটরশীর পীরদের আয় উন্নতি, হাদিয়া বকরী বদলে উট দেখে বলা যাবে না ওরাও ভন্ড।
অভন্ড পীর কোথায় পাবেন, দেখতে হবে তাদের তরীকা ।
পীরে এ কামিল হওয়ার ২য় ছবক: কারামতি
-ভাল মন্দ যাচাই এর মালিক আপনে ।